তালেবানের পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহত, বাড়ছে যুদ্ধের আশঙ্কা

মোট দেখেছে : 154
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে শনিবার রাতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে কাবুল। একই ঘটনায় ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, তারা আফগান সীমান্তের ১৯টি ফাঁড়ি দখল করেছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে আফগান রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্তে এই সংঘর্ষ ঘটে।

আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ স্থানীয় গণমাধ্যম টোলো নিউজকে বলেন, আফগান বাহিনীর প্রতিশোধমূলক অভিযানে পাকিস্তানের বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র দখল করা হয়েছে। তবে এই সংঘর্ষে ২০ জনের বেশি তালেবান সেনাও নিহত বা আহত হয়েছেন।

পাকিস্তান এখনো কাবুলের এই দাবি স্বীকার করেনি। বরং দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাদের বাহিনী কুনার ও হেলমান্দ সীমান্তের ১৯টি আফগান ফাঁড়ি দখল করেছে এবং আফগান যোদ্ধারা পিছু হটেছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি বলেন, “আফগান বাহিনী বিনা উসকানিতে বেসামরিক জনগণের ওপর গুলি চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। আমাদের সেনারা দ্রুত ও কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে। কোনো ধরনের উসকানি সহ্য করা হবে না।”

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম পিটিভির এক ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী কুররাম এলাকায় কয়েকটি আফগান ফাঁড়িতে আগুন জ্বলছে। ভিডিওতে কয়েকজন আফগান সেনাকে আত্মসমর্পণ করতে দেখা যায় বলে দাবি করা হয়।

অন্যদিকে রেডিও পাকিস্তানের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানি বাহিনী তালেবান নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি—মানোজবা ব্যাটালিয়ন সদর, জান্দুসার ফাঁড়ি ও খারচার ফোর্ট—ধ্বংস করেছে।

গত বৃহস্পতিবার কাবুলে বিমান হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে তালেবান সরকার। তবে ইসলামাবাদ বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা পাল্টা অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে, যারা ভারতের সহায়তায় পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে।

নয়াদিল্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আর তালেবান জানিয়েছে, তারা কখনোই তাদের ভূখণ্ড অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অনুমতি দেয় না।

দুই দেশের মধ্যে এই সাম্প্রতিক সংঘর্ষে আবারও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।