বিশ্বজুড়ে এখন গ্রিন টি অনেকের সকাল–সন্ধ্যার সঙ্গী। ওজন কমানো থেকে শুরু করে ডিটক্স—সব ক্ষেত্রেই গ্রিন টির নাম শোনা যায়। তবে প্রশ্ন হলো—এটা কি সত্যিই এত উপকারী, নাকি এর ভেতর লুকিয়ে আছে কিছু ক্ষতির ঝুঁকি?
গ্রিন টি—অসুখের ওষুধ নাকি নতুন বিপদের কারণ ?





গ্রিন টির উপকারী দিক
গ্রিন টিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও নানা উপাদান, যা শরীরের ভেতর কাজ করে একধরনের প্রাকৃতিক ওষুধের মতো।
১. ভিটামিন সি (Vitamin C):
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ঠান্ডা-কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
২. ভিটামিন বি২ ও বি৩ (Vitamin B2, B3):
শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। চুল, নখ ও ত্বককে সুস্থ রাখে।
৩. ভিটামিন ই (Vitamin E):
ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে এবং কোষের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।
৪. মিনারেলস (Potassium, Magnesium, Zinc):
হার্টের কার্যক্ষমতা ভালো রাখে, হাড়কে মজবুত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।
৫. ক্যাটেচিন ও পলিফেনলস (Catechins & Polyphenols):
এগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে টক্সিন কমায়, রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
গ্রিন টির সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক
তবে সব ভালো জিনিসেরও সীমা আছে। বেশি গ্রিন টি পান করলে যেসব সমস্যা হতে পারে—
১. ক্যাফেইনের প্রভাব:
অতিরিক্ত গ্রিন টি ঘুমের সমস্যা, নার্ভাসনেস বা হৃদস্পন্দন বাড়াতে পারে।
২. গ্যাস্ট্রিক ও পেটের সমস্যা:
খালি পেটে গ্রিন টি খেলে অনেকের এসিডিটি বা পেট জ্বালাপোড়া হতে পারে।
৩. আয়রন শোষণ কমানো:
গ্রিন টিতে থাকা কিছু উপাদান খাবার থেকে আয়রন শোষণকে কমিয়ে দিতে পারে। ফলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৪. লিভারের ওপর চাপ:
অতিরিক্ত গ্রিন টি বা গ্রিন টি সাপ্লিমেন্ট লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তাহলে কীভাবে খাবেন?
-
প্রতিদিন ২–৩ কাপের বেশি না খাওয়াই ভালো।
-
খালি পেটে নয়, খাবারের পর বা বিকেলে খাওয়া উপযুক্ত।
-
যাঁরা গর্ভবতী, উচ্চ রক্তচাপ বা হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শেষকথা
গ্রিন টি নিঃসন্দেহে উপকারী একটি পানীয়, তবে সীমার ভেতরে থেকে খেলে। একদিকে এটি শরীরকে ফিট রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, অন্যদিকে অতিরিক্ত সেবনে হতে পারে নানা ঝুঁকি। তাই সঠিক নিয়মে ও পরিমিত পরিমাণে গ্রিন টি–ই হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যকর জীবনের সঙ্গী।