কীভাবে বুঝবেন আপনার ফোন হ্যাক হয়েছে ?

মোট দেখেছে : 109
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

অনেকেই মনে করেন, “আমি তো ভিআইপি নই, আমার ফোন হ্যাক করবে কেন?” — কিন্তু সত্য হলো, যেকোনো সাধারণ ব্যবহারকারীও হ্যাকারদের টার্গেট হতে পারেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের ইন্টারনেট ক্রাইম কমপ্লেইন সেন্টার (IC3) প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১,৩০০টি সাইবার অপরাধের অভিযোগ পায়। সে বছর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা।

ফোন হ্যাক হওয়ার কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ

১. ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া
যদি ফোনের ব্যাটারি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত শেষ হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে ফোনে ম্যালওয়্যার চলছে।

২. ফোন গরম হয়ে যাওয়া
ব্যবহার না করলেও যদি ফোন গরম হয়ে থাকে, তবে এটি হ্যাকিংয়ের স্পষ্ট লক্ষণ।

৩. ফোনের কাজ ধীরগতি হয়ে যাওয়া
ফোন ধরা, কল দেওয়া বা মেসেজ পাঠানোর মতো সহজ কাজেও দেরি হলে, এর পেছনে হ্যাকারদের হাত থাকতে পারে।

৪. ডেটা ইউজেজ বেড়ে যাওয়া
অ্যাপ ব্যবহারের তুলনায় যদি হঠাৎই ডেটা খরচ বেশি হয়, তবে এটি ম্যালওয়্যারের কারণে হতে পারে।

৫. অজান্তে কল বা মেসেজ পাঠানো
আপনি না করেও যদি ফোন থেকে কল/মেসেজ চলে যায়, তবে হ্যাকার আপনার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।

৬. অজানা অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যাওয়া
আপনার অনুমতি ছাড়াই যদি নতুন অ্যাপ দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলুন। এগুলো সাধারণত ম্যালওয়্যার।

৭. অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক কার্যকলাপ
নতুন ডিভাইস থেকে লগইন বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের নোটিফিকেশন আসলে বিষয়টি সন্দেহজনক।

৮. হঠাৎ সিগন্যাল চলে যাওয়া
রিবুট করার পরও সিগন্যাল না এলে এটি ‘নম্বর পোর্টিং অ্যাটাক’। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও ইমেইল অ্যাকাউন্ট লক হয়ে যেতে পারে।

যেসব কারণে ফোন হ্যাক হতে পারে

১. আজেবাজে লিঙ্কে ক্লিক করা
ভুয়া ভিডিও বা নিউজ দেখে ভুলেও ক্লিক করবেন না।

২. পাবলিক চার্জিং স্টেশন ব্যবহার করা
বাস, মল বা রেলস্টেশনের চার্জিং পোর্টে হ্যাকিং ডিভাইস লুকানো থাকতে পারে।

৩. ক্ষতিকর অ্যাপ ডাউনলোড করা
অনেক সময় গেম বা ফ্রি অ্যাপের আড়ালে ভাইরাস লুকানো থাকে।

৪. চাকরির ভুয়া অফার গ্রহণ করা
অপরিচিত অ্যাপ ইনস্টল করিয়ে তথ্য চুরি করা হয়।

৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করা
ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে সহজেই আপনার ফোন মনিটর করা যায়। ভিপিএন ছাড়া ফ্রি ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলুন।

৬. এক পাসওয়ার্ড সবখানে ব্যবহার করা
সব অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড রাখলে, এক জায়গা হ্যাক হলেই অন্য সব জায়গা ঝুঁকিতে পড়ে।

৭. ফোন হাতছাড়া করে রাখা
পরিচিত মানুষও আপনার ফোনে স্পাইওয়্যার ঢুকিয়ে দিতে পারে।

ফোন হ্যাক হলে করণীয়

১. আতঙ্কিত হবেন না
শান্ত থেকে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নিন।

২. পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন
তবে ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

৩. মাল্টি–ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন
ফেসবুক, গুগল, ব্যাংক অ্যাপস—সবখানে দুই স্তরের সিকিউরিটি দিন।

৪. ডিভাইস রিস্টোর করুন
ফোন রিস্টোর করলে ম্যালওয়্যার মুছে যায়। তবে তথ্য ব্যাকআপ নিয়ে রাখুন।

৫. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মনিটর করুন
সন্দেহজনক লেনদেন দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্ট লক করুন।

প্রটেকশন টিপস

  • অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না

  • শুধু অফিসিয়াল স্টোর (Play Store / App Store) থেকে অ্যাপ ইনস্টল করুন

  • পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার না করাই ভালো, প্রয়োজনে ভিপিএন ব্যবহার করুন

  • পাবলিক চার্জিং স্টেশন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

  • সব অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

  • নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন

  • ফোনে অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করুন

  • ফোন হাতছাড়া করবেন না

  • সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে দ্রুত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন