শরৎ এসে গেলেও দেশের আবহাওয়ায় গরমের দাপট এখনো কমেনি। এই গরমে ঘাম হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু অনেকের জন্য ঘাম একটা বড় বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে যাদের ত্বক তৈলাক্ত বা অতিরিক্ত ঘাম হয়, তাদের পিঠে ব্রণ দেখা দেওয়ার প্রবণতা বেশি। ব্রণ শুধু অস্বস্তির কারণ নয়, দেখতে খারাপ লাগে, আত্মবিশ্বাসও কমিয়ে দেয়। তবে সুখবর হলো—কিছু সচেতনতা ও নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
গরমে ঘামের কারণে পিঠে ব্রণ: কারণ, সমাধান ও প্রতিরোধের উপায়





পিঠে ব্রণ হওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অতিরিক্ত ঘাম ও ময়লা জমে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটে এবং ব্রণ তৈরি হয়। আঁটসাঁট পোশাকও এর একটি কারণ, কারণ এসব পোশাক ঘাম শোষণ করতে পারে না, বরং ঘাম ও তেল জমে গিয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে। যাদের ত্বক স্বাভাবিকভাবেই তৈলাক্ত, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। তাছাড়া ঘামের পর ভালোভাবে গোসল না করলে বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব থাকলে পিঠে ব্রণ দ্রুত বেড়ে যায়।
এই সমস্যার সমাধান করতে হলে প্রথমেই পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। প্রতিদিন অন্তত একবার ভালোভাবে গোসল করা উচিত, বিশেষ করে ঘেমে যাওয়ার পর দ্রুত শরীর মুছে শুকনো কাপড় পরা দরকার। হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক, বিশেষ করে সুতি কাপড় ব্যবহার করলে ঘাম সহজে শোষিত হয় এবং বাতাস চলাচল করে, ফলে ত্বক স্বস্তি পায়।
সপ্তাহে এক-দু’বার হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করলে মৃত কোষ ও জমে থাকা তেল পরিষ্কার হয়, তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি ঘষাঘষি না করা হয়। ভারী লোশন বা তেলজাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার না করে হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো।
খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। অতিরিক্ত তেল-ঝাল, কোমল পানীয় বা বেশি চিনি খেলে ব্রণ বেড়ে যেতে পারে। পরিবর্তে পর্যাপ্ত পানি, শাকসবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস ব্রণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। চাইলে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারঅক্সাইডযুক্ত মেডিকেটেড ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে, যেগুলো ব্রণ কমাতে কার্যকর।
তবে যদি ব্রণ খুব বেশি হয়ে যায়, ব্যথা করে বা দাগ থেকে যায়, সেক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সঠিক ওষুধ ও চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
সবশেষে বলা যায়, নিয়মিত যত্ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, সঠিক খাবার ও পোশাক বেছে নেওয়া—এই অভ্যাসগুলোই গরমে ঘামের কারণে পিঠে ব্রণ প্রতিরোধের মূল উপায়।