জরুরি প্রয়োজনে টাকা ধার করা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু যদি ধার নেওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়, সেটিই হয়ে ওঠে বড় সমস্যা। নিয়মিত ধার করার ফলে আর্থিক চাপ বাড়ে, মানসিক অবসাদে ভুগতে হয়, এমনকি জীবনে নানা অঘটনের আশঙ্কাও তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋণের অভ্যাস মানুষকে দীর্ঘমেয়াদে দরিদ্র করে তোলে।
ধারের বদভ্যাস আছে? করণীয় জানুন





একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে মানুষ সবচেয়ে বেশি ধার করে সংসার খরচ মেটাতে। এর পাশাপাশি চিকিৎসা, ব্যবসা, বাড়ি তৈরি বা বাকি খাওয়ার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে অনেকেই আয় কম হলেও উচ্চ আয়ের মানুষের মতো জীবনযাপনের চেষ্টা করেন। এই মানসিক চাপও অনেককে অযথা ধার করতে প্রলুব্ধ করে।
আয়ের চেয়ে বেশি খরচ করলে সমস্যার সমাধান হয় না, বরং সমস্যা আরও বাড়ে। তাই ধার করার অভ্যাস ছাড়তে চাইলে কিছু কার্যকর পদ্ধতি মেনে চলা জরুরি।
প্রথমেই আয়ের সঙ্গে খরচের তালিকা তৈরি করুন। কোন খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হচ্ছে তা খুঁজে বের করুন। নিয়মিত বাজেট করলে ধার করার প্রবণতা কমে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আয় বাড়লে অনেকেই প্রয়োজনের চেয়ে বিলাসী খরচে বেশি ঝুঁকেন, যা শেষ পর্যন্ত ঋণগ্রস্ত করে তোলে।
জরুরি তহবিল গড়ে তোলাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি মাসে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করলে হঠাৎ প্রয়োজন মেটাতে ধার নেওয়ার দরকার পড়ে না। তাছাড়া বড় কোনো খরচ করার আগে কিছুটা সময় নিয়ে ভেবে দেখা উচিত, সেটি আসলেই জরুরি কি না।
অনেক সময় ধার করার অভ্যাস তৈরি হয় পরিবেশের প্রভাবে। যাঁদের সঙ্গে মেলামেশা করেন তাঁরা যদি অযথা খরচে অভ্যস্ত হন, তাহলে আপনার ওপরও এর প্রভাব পড়বে। তাই আর্থিকভাবে সচেতন মানুষের সঙ্গ নিন এবং প্রয়োজন হলে আর্থিক পরামর্শদাতা বা কোনো সহায়ক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হোন।
ধার নেওয়া কখনোই স্থায়ী সমাধান নয়। বরং খরচ কমানো, আয় বাড়ানোর পথ খোঁজা এবং সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করলেই দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক চাপ কমানো সম্ভব। জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তনই আপনাকে ধারের অভ্যাস থেকে মুক্ত করতে পারে।