এসসিও সম্মেলন ২০২৫: চীনে মুখোমুখি মোদি–পুতিন, কী বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে?

মোট দেখেছে : 84
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

এসসিও সম্মেলন ২০২৫-এ একসাথে বসছেন চীন, রাশিয়া ও ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার সময় এই সম্মেলন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল?

চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর তিয়ানজিনে শুরু হয়েছে বহুল আলোচিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন। আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) এই সম্মেলনে যোগ দিতে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর একদিন আগে একই জায়গায় পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে আয়োজিত এই সম্মেলনে চীন, ভারত, রাশিয়া, পাকিস্তান, ইরানসহ এসসিওর ১০ সদস্য রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা যোগ দিচ্ছেন। এছাড়া আরও ১৬টি দেশ পর্যবেক্ষক বা সংলাপ সহযোগী হিসেবে অংশ নিচ্ছে। ফলে এটি হচ্ছে এসসিও ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সম্মেলন, যেখানে ২০টিরও বেশি দেশের নেতাদের উপস্থিতি থাকবে।

সম্মেলনের তাৎপর্য

এই সম্মেলন শুধু আঞ্চলিক নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। কারণ—

  • যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়া-চীনের বিরোধ ক্রমেই গভীর হচ্ছে।

  • ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বাণিজ্যিক শুল্ক ইস্যুতে টানাপোড়েনে রয়েছে।

  • রাশিয়া চাইছে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে।

  • চীন চেষ্টা করছে এসসিওকে একটি অপশ্চিমা শক্তির জোট হিসেবে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে পুতিনের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “এসসিও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, হুমকির জবাব এবং ইউরেশীয় অঞ্চলে সংহতি জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন

ঠিক এমন এক সময়ে এই সম্মেলন হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্কের চাপ। ফলে বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে, যা রাশিয়ার জন্য সুযোগ হয়ে এসেছে।

চীনের ভূমিকায় পরিবর্তন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন চাইছে এসসিওকে পশ্চিমা প্রভাবের বিকল্প শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে।

  • নানইয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডিলান লোহ বলেন, “চীন দীর্ঘদিন ধরে এসসিওকে অপশ্চিমা শক্তির জোট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এটি এক ধরনের চীন-প্রভাবিত বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা, যা পশ্চিমা আধিপত্য থেকে ভিন্ন।”

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

সম্মেলনের পাশাপাশি পুতিনের তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় আসবে ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি।

মোদির চীন সফর

২০১৮ সালের পর এটাই মোদির প্রথম চীন সফর। সীমান্ত বিরোধে সম্পর্ক শীতল থাকলেও গত বছর রাশিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের পর থেকে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হতে শুরু করেছে।


কেন এবারের এসসিও সম্মেলন আলাদা?

১. ২০টিরও বেশি দেশের নেতাদের উপস্থিতি → ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সম্মেলন।
২. যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য টানাপোড়েনের সময় ভারতের অংশগ্রহণ।
৩. রাশিয়া-চীনের ঘনিষ্ঠতা এবং পশ্চিমা জোটের বিকল্প প্ল্যাটফর্ম গড়ার প্রচেষ্টা।
৪. আঞ্চলিক বিরোধ সত্ত্বেও চীন-ভারত একসঙ্গে অংশ নিচ্ছে।