মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছে, জননিরাপত্তার কারণে আফগান পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ইস্যু অবিলম্বে স্থগিত। ন্যাশনাল গার্ড সদস্য হত্যাকাণ্ডের পর ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘জননিরাপত্তা’ রক্ষার স্বার্থে আফগান পাসপোর্টধারীদের ভিসা ইস্যু অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি আরও জোরদার করার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আগেই ঘোষণা করেছিল যে সব আশ্রয় আবেদনের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত থাকবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার পররাষ্ট্র দপ্তর এই নতুন ঘোষণা দেয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, আফগান পাসপোর্ট ব্যবহারকারী সব ভ্রমণকারীর জন্য ভিসা ইস্যু আপাতত বন্ধ থাকবে।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ—গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় আফগান নাগরিক রহমানউল্লাহ লাকানওয়ালকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা। হামলায় একজন সদস্য নিহত হন এবং অন্যজন গুরুতর আহত হন।

রুবিও বলেন, “আমাদের জাতি ও জনগণের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

তদন্তে জানা গেছে, লাকানওয়াল ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা বাহিনীর প্রত্যাহারের পর যুক্তরাষ্ট্রে আসে এবং সেখানে সিআইএর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল। হামলার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা এবং অস্ত্রসহ হামলার দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে, ইউএসসিআইএস পরিচালক জোসেফ এডলোও ঘোষণা দিয়েছেন, “মার্কিন জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে” সব আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তি স্থগিত থাকবে। তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের নির্দেশে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর নাগরিকদের গ্রিনকার্ড আবেদন পুনরায় যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি “তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ” থেকে অভিবাসন সাময়িকভাবে বন্ধ করার পরিকল্পনা করছেন—যদিও তিনি এই শ্রেণিবিন্যাস স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেননি।

এছাড়া তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘ঝুঁকি বা বোঝা’ হিসেবে বিবেচিত অথবা ‘পশ্চিমা মূল্যবোধের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’ বিদেশিদের নাগরিকত্ব বাতিল ও বহিষ্কার করা হবে।

হোয়াইট হাউসে পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। চলতি বছর অক্টোবরে তিনি ঘোষণা করেন, ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ৭,৫০০ শরণার্থী গ্রহণ করবে, যা ১৯৮০ সালের পর সর্বনিম্ন সংখ্যা।