ভারতীয় ঠিকাদারের অবহেলায় স্থবির আশুগঞ্জ-সরাইল সড়ক, মহাসড়কের সাড়ে ১১ কিলোমিটার বেহাল

মোট দেখেছে : 5
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

আশুগঞ্জ থেকে সরাইল পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ১১ কিলোমিটারের রাস্তা এখন সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা এই অংশে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ছে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। মেরামতকাজও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় ভোগান্তি কমাতে সওজকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলমান কাজ তদারকির জন্য ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কে এম রেজাউল করিমের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি প্রতিদিন কাজের অগ্রগতি প্রধান প্রকৌশলীকে জানাবে। এছাড়া সরাইলে ক্যাম্প অফিস স্থাপন করে প্রকৌশলীদের সার্বক্ষণিক তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তা ফেরদৌস ভূঁইয়া নিয়মিত আশুগঞ্জ থেকে সিলেট যাতায়াত করেন। তিনি জানান, আগে যাত্রা সম্পন্ন করতে তিন ঘণ্টা লাগলেও এখন সময় লাগছে ছয় ঘণ্টারও বেশি। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্গাপূজার ছুটির সময় থেকে যানজট আরও বেড়ে গেছে। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে শুরু করে সরাইল বিশ্বরোড হয়ে হবিগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আটকে থাকছে যানবাহন।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পে ভারতের এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কাজ করছে। ভারতীয় ঋণে পরিচালিত প্রকল্পটির কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় রাস্তার বর্তমান অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহসানুল হক বলেন, “ঠিকাদারদের সময়মতো কাজ শেষ না করায় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

সওজের তথ্য অনুযায়ী, এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি বাসসহ বিপুলসংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির দুরবস্থার কারণে যাত্রীদের নিত্যদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে আশুগঞ্জ-আখাউড়া অংশের ভারতীয় ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অংশের নতুন পরিকল্পনায় রাস্তার প্রস্থ সাড়ে ৩ মিটারের বদলে সাড়ে ৫ মিটার করা হচ্ছে। এর জন্য অতিরিক্ত ১৬৪ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা দিয়ে সম্প্রসারণ ও মেরামতের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।