তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, কুড়িগ্রামে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী

মোট দেখেছে : 1
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির স্তর বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়। একই সঙ্গে জেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গাধর নদের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে তিস্তার পানি কমে বর্তমানে বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে

তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই গৃহপালিত পশু ও ছোট শিশুদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।

ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গাধর নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের আমন ধান ও শীতকালীন সবজির খেতও পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা আশঙ্কা করছেন, পানি দ্রুত না নামলে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, “ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি সাময়িকভাবে বেড়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদ এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই, দ্রুতই পানি নেমে যাবে।”

স্থানীয় ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা উকিল উদ্দিন জানান, “চরাঞ্চলে হাঁটুসমান পানি উঠেছে, ধানের শিষ পর্যন্ত ডুবে গেছে। পানি যদি আরও কিছুদিন থাকে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।”

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বলেন, “তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করলে ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চল থেকে কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে লালমনিরহাটের দোয়ানীতে আজ সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির স্তর বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচে নেমে এসেছে। গতকাল সন্ধ্যায় সেখানে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল, রাতেই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে (পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী) অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। আজ সকাল থেকে পানি কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।

ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম জানান, “পানি নামলেও কৃষকের ফসল নষ্ট হয়েছে, অনেক জায়গায় বালু জমে চাষযোগ্য জমি নষ্ট হয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে পানি কমছে, তিস্তা ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খোলা রয়েছে। কালীগঞ্জের তিস্তা ডান তীর বাঁধের ভাঙনও নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক।”