আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, “এখন অনেকেই ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু আমরা উপদেষ্টারা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমাদের কারও কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই।”
উপদেষ্টারা কি সত্যিই ‘সেফ এক্সিট’ ভাবছেন? আসিফ নজরুল বললেন, “আমাদের কারও দরকার নেই”
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’–এর ওপর জাতীয় পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আইন মন্ত্রণালয়।
আসিফ নজরুল বলেন, “বাংলাদেশের উপদেষ্টাদের নয়, বরং জাতি হিসেবে আমাদের সেফ এক্সিট দরকার। গত ৫৫ বছর ধরে গুম, দুঃশাসন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে আমরা ছিলাম। এই ভয়াবহ রাষ্ট্রকাঠামো থেকে বের হয়ে আসার প্রয়োজন আছে।”
আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা হয়তো অনেক ভালো আইন তৈরি করছি, কিন্তু শুধু ভালো আইন করলেই দেশ ভালো হয়ে যাবে—এটা ভাবার বয়স আমার নেই।”
প্রতিষ্ঠান গঠনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, “বাহাত্তরের সংবিধানে অনেক ভালো দিক ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি—সবসময় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নিয়োগ হয়েছে। এমন বিচারপতি ছিলেন, যাঁরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ধ্বংসে ভূমিকা রেখেছেন, এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁদের কেউ কেউ এখনো রয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ভালো আইন ভিত্তি হতে পারে, কিন্তু তার ওপর যদি দুর্বল প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো হয়, তাহলে কোনো লাভ নেই। প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হবে।”
সভায় আরও বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, “কিছু উপদেষ্টা নাকি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের সেফ এক্সিটের ব্যবস্থা করছেন।” ওই বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
English