রাতের আঁধারে সুন্দরবনের গহিন বনে হরিণ শিকার করে মাংস ও মাছ নিয়ে ফিরছিলেন একদল শিকারি। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টহলরত বনরক্ষীদের হাতে ধরা পড়ল তাঁদের মধ্যে একজন। এসময় উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪৮ কেজি হরিণের মাংস ও ৮০ কেজি মাছ।
সুন্দরবনে হরিণ শিকার, ৪৮ কেজি মাংসসহ ধরা পড়লেন এক শিকারি
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে খুলনার কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া নদীর তীরে। আটক শিকারির নাম দিদারুল ইসলাম (৩৫), তাঁর বাড়ি কয়রার মহারাজপুর গ্রামে। পালিয়ে যাওয়া আরেকজনের নাম মনিরুল ইসলাম সরদার, তিনি ১ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা।
কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন জানান, “টহল দেওয়ার সময় আমরা দেখি সন্দেহজনকভাবে একটি নৌকায় দুজন বসে আছে। কাছে যেতেই একজন নদীতে লাফ দিয়ে পালায়, আরেকজনকে আমরা আটক করি। নৌকায় বরফে রাখা হরিণের মাংস ও মাছ পাওয়া যায়।”
উদ্ধার করা নৌকা থেকে বড় চরেপাতা জাল ও ‘ডোয়া’ নামের ফাঁদ তৈরির দড়িও উদ্ধার করা হয়েছে। বনবিভাগ জানিয়েছে, এ ঘটনায় কয়রা বন আদালতে মামলা করা হবে। আদালতের নির্দেশে উদ্ধার করা মাংস বিনষ্ট করা হবে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, শিকারিরা সাধারণত বনের ভেতর মাছ ধরার জাল নিয়ে প্রবেশ করে। তারপর সেই জালের দড়ি দিয়ে নিজেরাই বানায় ‘ডোয়া’ নামের ফাঁদ। হরিণ ফাঁদে আটকা পড়লে তারা দ্রুত জবাই করে মাংস নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসে। পরে আবার ব্যবহারের জন্য ফাঁদগুলো মাটির নিচে পুঁতে রেখে যায়।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন,
“হরিণ শিকারের বিষয়ে আমাদের অবস্থান সম্পূর্ণ জিরো টলারেন্স। প্রকৃত সাফল্য হবে শিকার হওয়ার আগেই হরিণকে রক্ষা করা। আমরা ক্রেতা, বিক্রেতা ও শিকারিদের চিহ্নিত করছি এবং গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়েছে।”
English