বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬ শতাংশ শিশু খাবারের অ্যালার্জিতে ভোগে। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিশুর অ্যালার্জির উৎস গরুর দুধ, ডিম ও বাদামজাত খাবার। এছাড়াও গমজাত খাদ্য, মাছ ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম থেকেও অনেক শিশু অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়।
শিশুর খাবারে অ্যালার্জি: গরুর দুধ, ডিম ও বাদামেই আক্রান্ত হয় বেশিরভাগ শিশু
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬ শতাংশ শিশু খাবারের অ্যালার্জিতে ভোগে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিশুর অ্যালার্জির মূল উৎস গরুর দুধ, ডিম ও বাদামজাত খাবার। এছাড়া গম, মাছসহ নানা ধরনের খাবার থেকেও অনেক শিশু অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়। সাধারণত জন্মের পর প্রথম এক বছরেই দুধ ও ডিমের অ্যালার্জি দেখা দেয়, আর বাদামজাত খাবারে আক্রান্ত হয় একটু পরে। গাভির দুধ বা ডিমে অ্যালার্জি ৫ থেকে ৭ বছর বয়সে ৭৫ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে আপনা-আপনি সেরে যায়, তবে প্রায় ২০ শতাংশ শিশু বাদামজাত অ্যালার্জিতে সারা জীবন ভোগে। অ্যালার্জিজনিত কারণে শিশুদের পেটের অসুখ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এক বছরের কমবয়সী শিশুদের মধ্যে গরুর দুধে থাকা এক বিশেষ প্রোটিনের কারণেই এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। অ্যালার্জির সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে ত্বকে লালচে ভাব, চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, শ্বাসকষ্ট, বমি, ডায়রিয়া বা রক্ত আমাশয়। রোগ শনাক্তে চিকিৎসকেরা সাধারণত “ফুড উইথড্রোল ও চ্যালেঞ্জ” পদ্ধতি ব্যবহার করেন, যেখানে সন্দেহজনক খাবার কয়েক সপ্তাহ বন্ধ রেখে আবার খেতে দিলে উপসর্গ দেখা দিলে অ্যালার্জি নিশ্চিত হয়। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, তা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হয়। শিশুকে দুই বছর পর্যন্ত শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানো সবচেয়ে নিরাপদ, কারণ এতে অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তবে কোনো খাবারে অ্যালার্জি দেখা গেলে তা অল্প পরিমাণে পুনরায় দেওয়া যেতে পারে, যাতে শরীর ধীরে ধীরে সহনশীলতা তৈরি করে। শিশুর অ্যালার্জি প্রতিরোধে গর্ভবতী বা প্রসূতি মায়ের খাবারে অযথা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
English